মৃত্যুর পর শিশুদের সাথে কি আচরণ করা হয় - কোন বয়স থেকে শিশু গুনাগার হওয়া শুরু হয়
এই ৭ টি অভ্যাস রাসূল (সাঃ) কখনোই ছাড়তেন নামৃত্যুর পর শিশুদের সাথে কি আচরণ করা হয় - কোন বয়স থেকে শিশু গুনাগার হওয়া শুরু হয় পৃথিবীর সকল শিশুরা মৃত্যুর পর হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের কাছে কেন চলে যায়। প্রিয় দর্শক আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা আপনাদেরকে জানাবো মালাইকাল মাউত কিভাবে শিশুদের রুহ কবজ করেন এবং মৃত্যুর পর শিশুদের সাথে কি আচরণ করা হয়। কোন শিশু কাফেরের ঘরে জন্মগ্রহণ করে মৃত্যুবরণ করলে তার সাথে কি হয়।
মৃত্যুর পর শিশুদেরকে কি তাদের কবরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সর্বশেষ আমরা জানবো একটা নিষ্পাপ শিশু যদি কুফুরি করে তার বাবা মায়ের প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে মানে নাবালক বয়সে। তাহলে তার এই কর্মকাণ্ডের জন্য কেয়ামতের দিন কি হিসাব হবে যদি সেই শিশু নাবালক অবস্থায় মারা যায়। এখন জানা যাক কোন শিশু সাভালোক খাবার আগেই মারা গেলে তার কবরে হিসেব নেওয়া হবে কিনা।
এ সম্পর্কে বিভিন্ন স্কলাররা বিভিন্ন মত দিয়েছেন। তবে কোরআন এবং সুন্নাহর উপরে সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত মত হচ্ছে সকল শিশুরা এই নিষ্পাপ যে পর্যন্ত না তারা বালেক হয়। আর এজন্যই পৃথিবীর সকল শিশুদের ইন্তেকালের সময় মালাইকাল মাউত অত্যন্ত কোমলতার সাথে নাবালক শিশুর রুহ কবজ করে থাকেন।
আরো পড়ুন:- ছোট্ট সোনা মণিদের আরবী নামের তালিকা
এমনকি বলা হয়ে থাকে নাবালক শিশু কখনো কোন সংকটময় পরিস্থিতিতে কষ্ট পেতে থাকলে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন খুব দ্রুতই মালাইকাল মাউতকে নির্দেশ দেন যেন এই শিশুর রুহ অত্যন্ত কোমলতার সাথে কবজ করা হয়। তার কষ্ট যেন লাঘব করা হয় সুবহানাল্লাহ।
আর অবশ্যই তাদের আমলের কোন হিসেব করা হয় না। আল্লাহর রাসূলের হাদিস থেকে স্পষ্ট পাওয়া যায়। জান কবজের পর সরাসরি সেই শিশু বেহেশতে চলে যায়। হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং তার স্ত্রী হযরত সারা আলাইহিস সালামের হেফাজতে এবং কেয়ামত পর্যন্ত হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং তার স্ত্রী হযরত সারা আলাইহিস সালামের হেফাজতে চলে যায় সেই শিশু।
মৃত্যুর পর শিশুদের সাথে কি আচরণ করা হয় কেয়ামত পর্যন্ত সে তাদের হেফাজতে থাকে। কেয়ামতের পর সেই সন্তানের পিতা মাতা যদি জান্নাতে প্রবেশ করে। তাহলে সেই সন্তানকে তার পিতা মাতার কাছে হস্তান্তর করা হবে। যদি পিতা মাতা জান্নাতে না গিয়ে জাহান্নামে যায় তাহলে সেই নিষ্পাপ শিশু জান্নাতের অনন্তকাল সময় ব্যাপী হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং হযরত সারা আলাইহিস সালাম এর জিম্মায় থাকবে জান্নাতের মধ্যে।
এখানে আরেকটা কথা বলে রাখি কোন মুসলিম পিতা মাতার সন্তান যদি একদম ছোট বয়সে ইন্তেকাল করে। তবে সেই সন্তানটি কেয়ামতের দিন পিতা মাতার পাহাড় সমূহ গুনাহের নাজাতের উসিলা হবে। যেমনটা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন। কেয়ামতের দিন নিষ্পাপ শিশুরা আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছে তাদের পিতা মাতার জন্য সুপারিশ করবে।
যদি সেই পিতা মাতা ১ এবং অদ্বিতীয় সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী হয়। তখন আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালা তার সুপারিশ কবুল করবেন এবং তার পিতা মাতাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আবার অনেকে বলেছেন কবরে কিছু পরীক্ষা এমন আছে যার মুখোমুখি সবাইকে হতে হয়।
মৃতদেহ দাফনের পর সর্বপ্রথম কবরের দুইপাশ থেকে সংকোচিত হয়ে মৃতদেহকে প্রচন্ডভাবে চাপ দেয়। যার ফলে মৃত ব্যক্তির পাজরের হাড়গুলো একটি আরেকটির ভেতরে ঢুকে যায়। এবং বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায়। যাকেই কবরে দাফন করা হবে সবাইকে এর মুখোমুখি হতে হবে এবং কেউই এর থেকে নিরাপদ নয়।
হযরত আয়েশা থেকে বর্ণিত একবার যখন একটি শিশুর জানাজা তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি কেঁদে উঠলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তখন তিনি বলেন। যে মারা গিয়েছে সে এখনও একটি শিশু। তার জন্য আমার খুব দুঃখ হচ্ছে যে সে জান্নাতে গেলেও কবর কিন্তু তার উপরও সংকোচিত হয়ে চাপ দিবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নিষ্পাপ হওয়ার পরেও কবরে কি কোন প্রশ্ন করা হবে কিনা শিশুদেরকে।
কারণ আমরা জানি যে নেককার হলেও কবরে প্রশ্ন করা হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে তাহলে শিশুদেরকে কি করা হবে কিনা এ প্রশ্নের ইমাম ইবনে কায়ম বলেন। শিশুদেরকে যে কবরে প্রশ্ন করা হবে তার দলিল হচ্ছে শিশুদেরকেও জানাজার নামাজ পড়ানো হয় এবং তাদের জন্য এই দোয়া করা হয়। যে আল্লাহ তাদেরকে কবরের আজাব ও প্রশ্ন থেকে রক্ষা করুন।
মৃত্যুর পর শিশুদের সাথে কি আচরণ করা হয় আর এজন্যই অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মত হচ্ছে। কবরের ছোট বাচ্চাদেরকেও প্রশ্ন করা হবে। কারণ আল্লাহতালা কবরে মৃত শিশুদেরকে বুদ্ধিমত্তা পরিপূর্ণ দান করবেন। এবং তখন এই মৃত শিশুরা সম্পূর্ণ বুদ্ধিমত্তা অনুযায়ী ফেরেশতাদের প্রশ্নের জবাব দিতে সক্ষম হবে। মানে সোজা কথা প্রশ্ন করা হবে এবং প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সক্ষমতা আল্লাহ তাদেরকে দিবেন।
মাথায় রাখতে হবে এই শিশুর পূর্ণাঙ্গ সৃষ্টি কিন্তু মহান আল্লাহতায়ালা করেছেন। কাজেই আমাদের থেকেও এই শিশুর ব্যাপারে আল্লাহ পাকই সবচেয়ে বেশি জানে। তো প্রিয় দর্শক এবার জেনে নেই সেইসব শিশুর কথা। যারা কাফেরদের ঘরে বা মুসরিকদের ঘরে জন্মগ্রহণ করে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই মারা যায় তাদের ফায়সালা কি হবে
কাফেরদের ঘরে জন্মগ্রহণ করা শিশুর ফায়সালা কি হবে
মৃত্যুর পর শিশুদের সাথে কি আচরণ করা হয়একইভাবে হাদিসে রয়েছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার স্বপ্নে দেখলেন যে তিনি একটি বাগানে আছেন। এবং একজন লম্বা লোক সেই বাগানে হাঁটছেন আর তার চারপাশে অনেক শিশুরা খেলছিল। সেই লোকটির উচ্চতা এতই লম্বা যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম নিজে মাথা উঁচু করে যখন ওই লোকটির দিকে তাকালেন দেখে মনে হচ্ছিল যেন তিনি আকাশের সাথে কথা বলছেন।
আরো পড়ুন:- "ই" দিয়ে মুসলিম ছেলেদের আধুনিক নাম
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহিসালাম যখন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালামকে ওই ব্যক্তি ও তার চারপাশের শিশুদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তখন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বললেন। ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনি যে ব্যক্তিকে দেখছেন তিনি হলেন হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম।
তার আশপাশে যে শিশুরা খেলাধুলা করছে তারা হচ্ছে সেই সব শিশুরা যারা প্রকৃতিগতভাবে ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করেছে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই ইসলামের উপরে মারা গেছে। তার মানে ওই শিশুরা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে যদি মৃত্যুবরণ করে থাকে তাহলে অবশ্যই তারা ইসলামের উপরে মারা গেছে। পৃথিবীর কোন শিশুই ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন মাযহাবের উপরে তারা জন্মগ্রহণ করে না।
কারণ পৃথিবীর কোন শিশু ১ এবং অদ্বিতীয় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ধারণা অন্তরে না রেখে দুনিয়াতে আসেনা। মানে প্রত্যেক শিশুই যখন পৃথিবীতে আসে তখন তার হৃদয়ে ১ এবং অদ্বিতীয় আল্লাহ পাকের কনসেপ্ট প্রাকৃতিক ভাবেই গেঁথে দেওয়া হয়।
কিন্তু পৃথিবীতে আসার পরে তার পিতা মাতার প্ররোচনায় আশপাশের মানুষের প্ররোচনায় সে হয়তোবা মুশরিক হয়, অথবা নাস্তিক হয়, অথবা ধর্মহীন হয়ে যায়। কিন্তু জন্মের সময় ১ এবং অদ্বিতীয় আল্লাহপাকের কনসেপ্টের উপরে প্রত্যেকটি শিশু পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে।
মৃত্যুর পর শিশুদের সাথে কি আচরণ করা হয় সুতরাং বালেঘ হওয়ার আগে যদি কোন শিশু মারা যায়। তাহলে সে তাওহিদুর উপরে মারা যায়। আল্লাহর রাসূলের হাদিস থেকে স্পষ্ট এটা বোঝা গেছে। সুতরাং কাফেরের ঘরে নাস্তিক আস্তিক অথবা ধর্মহীন যে কোনো ব্যক্তির ঘরে যদি কোন নাবালেক শিশু ইন্তেকাল করে। তাহলে সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে। সরাসরি হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এর কাছে পৌঁছে যাবে। এবার জানা যাক যে ঠিক কোন বয়স থেকে একটা শিশু গুনাগার হওয়া শুরু হবে।
কোন বয়স থেকে একটা শিশু গুনাগার হওয়া শুরু হবে?
একটি শিশু যখন বালক হয় জ্ঞান ও বুদ্ধি বিবেচনার দিক থেকে পরিপক্ষ হয় এবং ভালো মন্দ চিনতে শুরু করে। তখন সেই বয়সে যদি কোন শিশু কুফুরি করে তখন থেকে তার কুফুরিকে কুফুর হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এবং সেই সন্তান কাফির বলে বিবেচিত হবে।
এখন প্রশ্ন হল কোন বয়স থেকে শিশু গুনাগার হওয়া শুরু হয় কাফির মুশরিকদের শিশুরা তারা যদি নাবালক অবস্থায় মারা যায়। তাহলে তো আমরা জানি যে তারা বেহেশতে যাবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে তারা বেহেশতের কোন স্থানে রাখা হবে। প্রিয় দর্শক আমি শুরুতেই বলেছি ওই শিশুরা সরাসরি হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের জিম্মায় থাকবে অনন্ত কাল ধরে। জান্নাতের মধ্যে যদি তার পিতা মাতা অপরাধের কারণে জান্নাত পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে।
ইসরাত টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url